ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। টানা দুই মাস সেখানে অবস্থান শেষে গুঞ্জন ছড়ায় ভারত ছেড়ে আরব আমিরাতে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
সোমবার (৭ অক্টোবর) রাতে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আমার মা ভারত ছেড়ে গিয়েছে বলে যে খবর শোনা যাচ্ছে, সেটি সঠিক নয়। তিনি এখনো ভারতেই অবস্থান করছেন।’
এর আগে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত ছাড়তে কোনো চাপ নেই।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে গত ৩ অক্টোবর টাইমস ম্যাগাজিনের সঙ্গে কথা বলেন সজীব ওয়াজেদ জয়। জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, তার মা নির্বাচনে লড়াবেন কিনা, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
নির্বাচনে নিজের অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি জানিয়ে জয় বলেন, আমার কখনোই রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল না।
শেখ হাসিনা ভারত ছেড়েছেন এমন ধারণার পেছনেও কারণ আছে। সম্প্রতি আরব আমিরাতে দেখা গেছে সাবেক এমপি শামীম ওসমানকে, যিনি ৫ আগস্টের পর ছদ্মবেশে সীমান্ত পারি দিয়েছেন বলে শোনা গিয়েছিল। তাই মনে করা হচ্ছে, আরব আমিরাতের আজমান শহরে শামীম ওসমানের বাড়িতে শেখ হাসিনা আশ্রয় নিয়েছেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আসা খবর থেকে জানা যায়, আরব আমিরাতের আজমানে শামীম ওসমানের নিজের একটি বাড়ি আছে। সম্প্রতি তাকে সেখানেই দেখা গেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তিনি এ বিষয়ে সহযোগিতা করছেন বলে জানায় সূত্রগুলো। ওসমান পরিবারের সঙ্গে হাসিনার সখ্যতা রয়েছে।
এর আগে শামীম ওসমানকে দিল্লিতে নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার দরগায়ে দেখা যায়। সেই ছবিও গণমাধ্যমে আসে। এর কিছুদিন পর দুবাইয়ের একটি শপিংমলে দেখা মেলে শামীম ওসমানের। সেখানে থেকে ধারণা পাওয়া যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতেই অবস্থান করছেন শামীম ওসমান।
এর আগে, একাধিক সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কাছে জানতে চেয়েছে, শেখ হাসিনা কীভাবে, কোন ব্যবস্থায় দিল্লিতে অবস্থান করছেন? জবাবে ভারত বলেছে, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের কোনো একটি দেশে তিনি চলে যাবেন। তবে এনিয়ে ওয়াশিংটন বা দিল্লি প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।
শেখ হাসিনা আসলেই আমিরাতে অবস্থান করছেন কিনা, সেটি নিয়ে সংশয় জানিয়েছে কিছু সূত্র। কারণ, এর আগে আমিরাতে হাসিনা রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলে দেশটি রাজি হয়নি। ব্রিটেন, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশোর মতো আরব আমিরাতও শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে মানা করে দেয়।
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করেন তারা। এর পর থেকে তারা কোথায় আছেন, তা আর জানা যায়নি।
এদিকে শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকা কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ধরনের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া ভারতে ৪৫ দিন বৈধভাবে থাকতে পারেন। কিন্তু শেখ হাসিনা প্রায় দুই মাস ধরে ভারতে অবস্থান করছেন। কূটনৈতিক পাসপোর্টে তার বৈধভাবে অবস্থানের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।
পিপলনিউজ/আরইউ
প্রকাশক ও সম্পাদক
জাহিদুল ইসলাম
বার্তা সম্পাদক
সোহেলী চৌধুরী লিন্ডা
© 2024 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || peoplenewsbd.com