ঢাকা, বাংলাদেশ ২০ অক্টোবর, ২০২৪

বর্তমান সরকার যে উন্নয়ন করেছে তার সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে: সাবের হোসেন চৌধুরী

Publish : 03:51 PM, 08 September 2024.
বর্তমান সরকার যে উন্নয়ন করেছে তার সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে: সাবের হোসেন চৌধুরী
ঢাকা-৯ আসনের নৌকা প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী
সংগৃহীত :

রাজনীতিতে তার অভিষেকটা ছিল- এলাম দেখলাম জয় করলামের মতো। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যতগুলো চমক দেখিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী। বিভিন্ন সময়ে তিনি জাতীয় সংসদ, সরকার, রাজনৈতিক দল ও ক্রীড়া প্রশাসনে গুরুতপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০১৪ সালে তিনি ২৮তম ইন্টারন্যাশনাল পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হন। তিনিই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই সংস্থার নেতৃত্বের সর্বোচ্চ পদে আসীন হন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, নির্বাচন পরবর্তী সময় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে করণীয়সহ নানা বিষয় নিয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী  কথা বলেছেন তিনি।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসব নির্বাচন। কোনো নির্বাচন এলেই বাংলাদেশের মানুষ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। আর তাই রবিবার অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজে ভাসছে গোটা দেশ। তবে ভোটকেন্দ্রে অধিকমাত্রায় ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করাই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে মনে করি। সাবের চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে ঢাকা-৯ আসনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মোট ভোটার সংখ্যা সাড়ে ৪ লাখ। তবে আমার নেতাকর্মীরা প্রতিটা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ

নিয়েছে। আমরা বুথভিত্তিক কাজ করেছি। তাই হিসাবটা নির্ভুল হয়েছে বলে মনে করি। আমাদের হিসেবে এ আসনে ২ লাখ ৫ হাজার ভোটার আছে। চার দিনের ছুটির কারণে এখান থেকেও হয়তো একটি অংশ থাকবে না। তিনি বলেন, আমরা এখন ভোটার উপস্থিতি টার্গেট করছি ২ লাখ ভোটারের উপর। এটা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা চাই যেন ভোটার উপস্থিতি শতভাগ হয়। কিন্তু যেসব ভোটার এলাকাতেই থাকবেন না তাদেরকে তো আনা সম্ভব নয়।

ভোটার সংখ্যা কম হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খিলগাও, সবুজবাগ, মুগদা এলাকায় আগের তুলনায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। এজন্য এলাকার বাসা-ভাড়াও কিছুটা বেড়েছে। ফলে যারা টিকে থাকতে পারেনি, তাদের অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। এছাড়া আগে যেখানে মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্তদের উপযোগী বাসা পাওয়া যেত, ভাসমান বা কিছু আধা-ভাসমান মানুষের বসবাস ছিল। এখন সেসব জায়গা ডেভেলপারের দায়িত্বে দিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে এসব জায়গায় নতুন নতুন লোকের উপস্থিতি হচ্ছে যারা

এ এলাকার ভোটার নয়। তবে বর্তমানে যেসব ভোটার রয়েছেন তাদের কাছ

থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছেন উল্লেখ করে এ রাজনীতিক বলেন, বর্তমান সরকার যে উন্নয়ন করেছে তার সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে। সরকারের উন্নয়নের শত ভাগ প্রভাব এ এলাকার মানুষও পাচ্ছে। কিছু সমস্যা এখনো রয়েছে, যেমন- মূল্যস্ফিতি। এটা আমাদের জাতীয় সমস্যা। গ্যাস সংকটের কথা উল্লেখ করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ঢাকা নিয়ে সরকারের যে পরিকল্পনা রয়েছে- তার মধ্যে এটা যুক্ত রয়েছে। আমি ইতোমধ্যে এ এলাকায় কিছু কাজ শুরু করেছি। জরিপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় পাইপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলো মেরামতের ব্যবস্থা করছি। আর যেসব এলাকার পাইপ বেশি পুরনো হয়ে গেছে বা পাইপগুলো নষ্ট হয়ে গেছে- সেগুলো পরিবর্তন করে নতুন পাইপলাইন বসানো হবে। আমরা ইতোমধ্যে

কাজগুলো শুরু করেছি। যুব সমাজ নিয়েও রয়েছে এ রাজনৈতিক নেতার

অনেক পরিকল্পনা। তিনি বলেন, আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলি, সেখানে আমরা চাই আধুনিক প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে আরো ত্বরান্বিত করতে। আমরা চাই যেন প্রত্যেক মানুষ বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সুফল পায়। এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের এ আসনে অনেক যুবক রয়েছেন যারা শিক্ষিত কিন্তু বেকার। আমরা কীভাবে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি বা তাদের কীভাবে আত্মকর্মস্থানের জন্য উদ্বুদ্ধ করা যায় সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি। আমাদের এলাকায় অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলোকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে কাজ করছি।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ বা পিলার রয়েছে। স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক। বেকারত্বের হার কমাতে এবং স্মার্ট নাগরিক গড়ে তুলতে ফ্রিল্যান্সিং ট্রেইনিং, কারিগরী প্রশিক্ষণ ও আধুনিক শিক্ষার প্রসার ঘটানোর কর্মপরিকল্পনা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বর্তমানে বেকারত্বের হার ১০ শতাংশ। আওয়ামী লীগ সরকার সেটিকে ৩ শতাংশে নিয়ে আসতে চায়। আগামীতে নির্বাচিত হলে আমার প্রধান লক্ষ্য হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া। নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য সহজশর্তে ঋণ দেয়া

এবং যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ হিসেবে তৈরি করা। এছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেও নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তিনি।

আবারো নির্বাচিত হলে বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার বিষয় নিয়ে কাজ করবেন সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, উন্নয়ন বলতে শুধু মেগা প্রকল্পগুলো নয়; বরং এমন বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দেব- যেগুলো সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। নৌকার এ প্রার্থী জানান, এ এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে সবুজবাগ এবং মুগদায় মেট্রোরেল স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে।

বিশ্বরোডে দৃশ্যমান ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। বলেন, আমি মনে করি- যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে আমাদের এ এলাকা। চলমান কাজগুলো

শেষ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় পূর্ণতা আসবে, সাধারণ মানুষের জীবন আরো সহজ হবে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্যও রয়েছে তার নানা পরিকল্পনা। তিনি বলেন, আমার এলাকায় অনেকে আছেন যাদের গাড়ি বা রিকশায় নিয়মিত চলা সম্ভব নয় বা সামর্থ নেই। এ সংখ্যাটা অনেক বেশি। আমরা বড় বড় প্রকল্প নিয়ে উন্নয়নের কথা বলি- ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, অ্যালিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে- এসব দৃশ্যমান। তবে সবাই তো এসবের সুবিধা নিতে পারছে না বা যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষ বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ যারা প্রতিদিন পায়ে হেটে চলাচল করেন তাদের জন্য একটি উন্নতমানের ফুটপাথের কথা ভাবছি। শুধু ফুটপাথ তৈরি করে দিলেই হবে না, এটাকে দখলমুক্ত রাখারও ব্যবস্থা করতে হবে। এই এলাকায় বেশকিছু ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলে, সেখানে একটি বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। বিষয়গুলোকেও

আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদার জনসাধারনের নিরাপত্তা এবং তাদের জিবনযাত্রার মান উন্নতকরণ- সর্বোপরি ঢাকা-৯ নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণ যেন স্বস্তিতে বসবাস করতে পারেন সে জন্য সব ধরনের উদ্যোগের পরিকল্পনা রয়েছে। খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা এলাকার যে কোনো সমস্যার কথা তাকে সরাসরি তাকে জানাতে বিশেষ উদ্যোগ 'ই- সমাধান' এর বিষয়ে সবাইকে অবহিত করেন। এলাকাবাসীর প্রত্যাশিত জিরানী খালকে দখল ও দূষণমুক্ত করে খালের দুই পার্শ্বে ওয়াকওয়ে নির্মান করে হাটাচলা ও প্রাতঃভ্রমণের সুব্যবস্থা করণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ইতোমধ্যেই ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সংসদ সদস্য থাকার সময় এলাকায় কী কী উন্নয়ন হয়েছে- সেই বিবরণও তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী। তিনি বলেন, মুগদা হাসপাতাল যখন শুরু করেছি, তখন এটি ছিল ৫০০ শয্যার, এখন হয়েছে ৭৫০, সরকারের সিদ্ধান্ত হয়েছে, এটি দেড় হাজার শয্যার হবে। মুগদা মেডিকেল কলেজ স্থাপন এবং এর সামগ্রিক

অবকাঠামো নির্মাণ ও নার্সিং কলেজ নির্মাণে ৫৮৬ কোটি টাকার প্রকল্প একনেক অনুমোদন করেছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন মেট্রেরেলের এমআরটি লাইন ৬ এর ষ্টেশন আছে আসনে। এমআরটি ৫ এর স্টেশনও হবে এই এলাকায়। উপমহাদেশের অন্যতম অ্যাডভান্সড নাসিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, ৫টি নতুন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান স্থাপন, সব রাস্তাঘাট উন্নয়ন, শতভাগ পানি সরবরাহ, শতভাগ বিদ্যুৎ চাহিদা পুরণ এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিজস্ব অর্থায়নে ৪১৫টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন বলেও জানান সাবের হোসেন চৌধুরী।

দ্বাদশ নির্বাচন বিভাগের অন্যান্য খবর

Follow Us

প্রকাশক ও সম্পাদক
জাহিদুল ইসলাম
বার্তা সম্পাদক
সোহেলী চৌধুরী লিন্ডা

© 2024 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || peoplenewsbd.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান শিরোনাম খামেনির ওপর হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল শিরোনাম পাকিস্তানের সঙ্গে ড্র করে সাফে টিকে রইল বাংলাদেশ শিরোনাম হাজারীবাগে ভবন নির্মাণে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, গ্রেপ্তার ১ শিরোনাম ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী বাবু গ্রেপ্তার শিরোনাম ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ১২৬৩ মামলা, জরিমানা প্রায় ৫১ লাখ টাকা